আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত মোবাইল রুট করলে কি কি সুবিধা পাই?মোবাইল রুট করা কি ক্ষতিকর? মোবাইল রুট করার পর আমাদের স্মার্টফোনটিতে করণীয় কি? নতুন যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের মধ্যে এগুলো খুব কম প্রশ্ন হয়ে থাকে। মূলত আমরা এই পোস্টটি তাদের সহজভাবে বোঝানোর জন্য রুট কি ও ব্যবহার এবং তার ক্ষতিকর দিক ও করণীয় এই পোস্টে আলোচনা করব।
মোবাইল রুট করার সুবিধা গুলো বিস্তারিত জেনে নেই। মোবাইল রুট করার অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আমরা যারা স্মার্টফোনে গেমস খেলি সেগুলো ব্যবহারের জন্য টাকা ব্যয় করতে হয়। আপনারা যদি মোবাইল রুট ব্যবহার করেন তাহলে আপনাদের জন্য সব গেমসগুলো তাই ফ্রি হয়ে যাবে। এবং রুট ব্যবহারের সুবিধা গুলো আপনারা বুঝতে পারবেন।
স্মার্টফোনে রুট সেটিং করলে কি হয়
মনে করুন আপনি আপনার পুরাতন ফোনটি পরিবর্তন করে নতুন মোবাইল ফোন কিনবেন। কিন্তু এখানে সমস্যা হল নতুন ফোন কিনে আবার আপনাকে প্রথম থেকে সমস্ত সেটিংস ঠিক করতে হবে। আপনার আগের ফোনটিতে প্রয়োজনীয় সব ডাটা এবং গেমস সেগুলো আপনাকে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি রুট ব্যবহারকারী হন তাহলে আপনার সমস্যা 99.9% সমাধান হয়ে যাবে। আপনার আগের স্মার্ট ফোনটির সমস্ত ডাটা এবং গেম ও এসএমএস, ফোন বুক হুবহু কপি করে নিতে পারবেন।
রুট ব্যবহারকারীর সবচেয়ে বড় সুবিধা
রুট ব্যবহারকারীর ভালো দিক হলো টেকনিক্যাল উপায়ে আপনি আপনার স্মার্টফোনের র্যাম এবং স্টোরেজ খুব সহজেই বাড়াতে পারবেন। এছাড়া রুট ব্যবহার করে র্যাম এবং স্টোরেজ কন্ট্রোল করে আপনার স্মার্টফোনে রিফ্রেশমেন্ট বাড়াতে পারবেন। রুট ব্যবহার করে আপনি আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি পারফরম্যান্স আগের তুলনায় অনেক ভালো করতে পারবেন।
ব্যাটারির দ্রুত চার্জ যাওয়ার কারণ
স্মার্টফোনে অনেকগুলো অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস দেওয়া থাকে। যেগুলো স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে সব সময় চালু থাকে। এর ফলে স্মার্টফোনটির ব্যাটারির ওপর প্রচণ্ড পরিমাণ চাপ পড়ে যার জন্য ব্যাটারির দ্রুত চার্জ ফুরিয়ে যায়। এছাড়া এই অ্যাপসগুলো র্যাম এবং রম দখল করে রাখে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনারা রুট ব্যবহার করতে পারেন।
রুট ব্যবহার করে যেগুলো পরিবর্তন করতে পারবেন
স্মার্টফোনের বুট এনিমেশন, ডিফল্ট বুট লোগো, রিংটোন, ওয়ালপেপার ইংরেজি এবং বাংলা ফন্ট ইত্যাদি রুট ব্যবহার করে পরিবর্তন করা যায়। মনে করুন আপনি ম্যাক্সিমাস কোম্পানির মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। ফোনটি স্টার্ট করার সময় যে ভোট এনিমেশন দেখা যায় এবং লগইন সাউন্ড শোনা যায় এটি আপনার পছন্দ না। আপনি যদি রুট ব্যবহারকারী হন তাহলে ম্যাক্সিমাস ফোনের সাউন্ড এবং এনিমেশন বুট চেঞ্জ করে যেকোনো ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনের সাউন্ড বা এনিমেশন ব্যবহার করতে পারবেন।
রুট ব্যবহার করে মোবাইল ডাটা বাঁচান
আপনার স্মার্ট ফোনে অপ্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপস থাকে। যেগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে সব সময় একটিভ থাকে। কিন্তু অ্যাপসগুলো আপনার মোবাইল ফোনের মূল্যবান ইন্টারনেট ডাটা নিজের অজান্তে ই ফুরিয়ে ফেলছে। আপনি যদি মোবাইল রুট ব্যবহারকারী হন তাহলে এই অপচয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ সমাধান পাবেন। রুট ব্যবহার করে আপনি আপনার স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড এর কোন অ্যাপস এক্সেস পাবে আর কোনটা পাবে না এটি আপনি নিজেই সমাধান করে দিতে পারবেন।
বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি
আমরা স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময় যে অ্যাপসগুলোতে প্রবেশ করি সেখানে একটু পর পর বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। যার ফলে আমরা বিরক্ত হয়ে যাই। আপনারা আপনাদের ফোনে রুট ব্যবহার করে বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
রুট ব্যবহার করে কোন ভার্সন আপডেট দেওয়া যায়?
আপনি আপনার স্মার্টফোনে রুট ব্যবহার করে বর্তমান যেই অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনগুলো নতুন নতুন ফোনে ব্যবহার করা হয় সেই অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন গুলো আপনি আপনার ফোনে আপডেট করতে পারবেন। লেটেস্ট ভার্সন গুলোর মধ্যে হল-এন্ড্রয়েড ভার্সন টেন, এনড্রয়েড ভার্সন এলিভেন, এবং অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ১২ খুব সহজে আপডেট করা যায়।রুট ব্যবহার করে উপরোক্ত সুবিধা গুলো ছাড়াও আরো অনেক সুবিধা রয়েছে। যা বলে শেষ করা যায় না। রুট ব্যবহার করে আপনি আপনার স্মার্টফোনটি খুব সহজে এক্সেস করতে পারবেন।
মোবাইল রুট করার ঝুঁকি
বর্তমানে মোবাইল ফোন রুট করা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে কারণ এখন যারা মোবাইল রুট করে তারা ফ্রেন্ডলি রুট অ্যাপটা ব্যবহার করে থাকে। এখন সব ধরনের মোবাইলে রুট করা যায়। আগে নন ব্যান্ড ও ব্র্যান্ড হিসাব করা হতো কিন্তু এখন দুইটাতেই রুট করা সম্ভব হয়। আপনি যদি রুট করার পরে মোবাইলটি নতুন ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনাকে আগে জানতে হবে ফাইলের এক্সেস বিষয়ে। এগুলো যদি আপনি জানা থাকে তাহলে আপনার মোবাইল চালাতে কোন ধরনের যোগী থাকবে না মোবাইলে কোন ধরনের সমস্যা দিবে না।
মোবাইল রুট করার পর করণীয়
সর্বপ্রথম মোবাইল রুট করার পরে আপনার জরুরী কাজ হল কাস্টম রিকভারি ফ্ল্যাশ করা এটা অত্যন্ত জরুরী। মোবাইল রিকভারি করার সময় সর্বপ্রথম আপনাকে সব কিছু ব্যাকআপ নিয়ে নিতে হবে। মোবাইল ফোন ব্যাকআপ করার পর আপনি ইচ্ছামত সবকিছুই করতে পারবেন সব কিছু ডিলিট করা মডিফাই করা আরো ইত্যাদি এগুলোতে কোন ধরনের ভয় থাকবে না। মোবাইল রুট করার পরে আপনাকে নির্ধারিত সময়ের ভিতর আবার রিকভারি ফাইলগুলো ফ্ল্যাশ করতে হবে।
কোন ধরনের ভুল ফাইল ফ্লাস করবেন না। মোবাইল রুট করার পরে আপনার সবকিছু সার্ভিস দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে এখন আপনাকে মোবাইলে কিছু অ্যাপস ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়তে পারে। আপনার স্মার্ট মোবাইল ফোনে অনেক ধরনের এস ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু এই অ্যাপসগুলোর মধ্যে কিছু অ্যাপস ব্যবহার না করলে চলবে না তার জন্য সেগুলো অ্যাপস নিম্নে দেওয়া হল।
মোবাইল রুট করা পার যেগুলো অ্যাপস প্রয়োজন
link2sd
adaway
titanium backup
greenify
droidwall
root browser
busy box
rom manazer
system file unistaller
bootanimation changer
kucky patcher
fonter
এগুলো ছাড়া আরো অনেক ধরনের অ্যাপস পেয়ে যাবেন। এগুলো উল্লেখ করার একমাত্র কারণ হলো এগুলো আপনার ফোনে ইন্সটল না করলে হবে না।
মোবাইলের নির্দেশনা
মোবাইল রুট করার জন্য প্রত্যেকটি মোবাইলের জন্য আলাদা ধরনের রিকভারি ফাইল থাকে আবার আলাদা ধরনের মডেলও থাকে। আপনার এগুলো কাস্টম রিকভারি থেকে শুরু করে সবকিছু মডেল আলাদা আলাদা ভাবে হয়ে থাকে যেগুলো আপনার google এর সাহায্য নিয়ে কাজ করতে হবে।গুগল আপনার মোবাইলের মডেলের নাম দিয়ে আপনি এই শব্দটি লিখুন তাহলেই আপনাকে গুগল সাহায্য করবে।
যেগুলো অ্যাপসের প্রয়োজন সেগুলো উপরোক্ত দেওয়া রয়েছে এগুলোর কোন দেখার প্রয়োজন নাই এগুলো শুধু প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করলেই হবে। গুগলে সার্চ দিয়ে আরো অনেক ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকবেন।
শেষ কথাঃ মোবাইল রুট করার সুবিধা
আপনি যদি মোবাইল রুট করে চালানোর মতো আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটা আপনার অবশ্যই উপকারে আসবে। মোবাইল রুট করার জন্য সাধারণত ফাইল প্রয়োজন হয় যেটি গুগলে আপনার দেওয়া থাকে। মোবাইল রুট করার মাধ্যমে অনেক ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকবেন যেগুলো উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url