২০২৩ সালের রোজা কি মাসে - ২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার
সূচিপত্র
কোন মাসে ২০২৩ সালের রোজা শুরু হবে
এই পবিত্র রোজার মাস আমাদের মুসলমানদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং এবাদত এর মাস। প্রতি বছরই এই পবিত্র মাসটি আমরা পেয়ে থাকি। আর এই প্রতিবছরের,পুরো এক মাস যেটি রোজার মাস, যে মাসে মুসলিমরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য রোজা রাখে এবং আল্লাহর এবাদত করে। আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য এই মাসটি একে অপরের সাথে সংযম রক্ষা এবং অন্যায় কাজ থেকে দূরে থাকার জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। অনেকে আছে যারা কোনভাবেই ২০২৩ সালের রোজা কি মাসে শুরু হবে তা খুঁজে পাচ্ছেন না।
এখন আপনাদের কোথাও ক্যালেন্ডার খোঁজাখুঁজি বা কিনতে যেতে হবে না কারণ আমরা আপনাদের জানাবো ২০২৩ সালের রোজা কি মাসে শুরু হবে ও ২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার সহ। আমি মনে করি আপনি এই পোস্টটি পড়ে ২০২৩ সালের রোজার কত তারিখে এবং কি মাসে ও 2023 সালের রমজানের ক্যালেন্ডার সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পারবেন।
২০২৩ সালের রোজা কত তারিখে এবং কি মাসে
আমার দেশে অনেকেই জানেনা ২০২৩ সালের রোজাকি মাসে শুরু হবে। ২০২৩ সালের রোজা তারিখে এবং কি মাসে শুরু হবে তা নিয়ে এবার আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। ২০২৩ সালের রোজা কত তারিখে কি মাসে শুরু হবে জানতে চাইলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ হবে। ২০২৩ সালের রোজা কত তারিখে এবং কি মাসে শুরু হবে তা জানতে চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেলগুলো দেখুন। চলুন এবার আপনাদের জানাবো ২০২৩ সালের রোজা কত তারিখে এবং কি মাসে শুরু হবে ও ২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার বাংলা ক্যালেন্ডার,ইংরেজি ক্যালেন্ডার এবং আরবি ক্যালেন্ডার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
গালফ নিউজের খবর এ জানানো হয় যে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের অ্যাস্ট্রোনমি জ্যোতির্বিদ্যা সোসাইটির পরিচালক পর্ষদের চেয়ারম্যান আরব ইউনিয়ন ফর অ্যাস্ট্রোনমি এন্ড স্পেস সায়েন্স এর সদস্য ইব্রাহিম আল জারওয়ান সংবাদ মাধ্যমকে জানান ২০২৩ সালের রমজান মাস ২৩ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২৯ দিন পূর্ণ হতে পারে। তিনি আরো জানান আরব আমিরাতে রোজা রাখার সর্বোচ্চ সময় হতে পারে ১৪ ঘণ্টা এবং মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই সময়ে প্রায় ৪০ মিনিটের পরিবর্তন আসবে। আরব আমিরাতে জ্যোতি বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালের মধ্যপ্রাচ্যে রমজান শুরু তারিখ জানিয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায়
জ্যোতি বিজ্ঞানীদের গণনা অনুযায়ী এই বছরের ২০২৩ সালের রোজা কি মাসে হবে তা জানিয়েছেন ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হলে মার্চ মাসের ২৩ তারিখে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রোজা শুরু হবে। ইব্রাহিম আল জারওয়ান আরো বলেছেন যে ২০২৩ সালে রমজানের ২২ মার্চ রাত ৯ টা তেইশ মিনিটে নতুন চাঁদ দেখা যাবে। সেই হিসাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর ২১ এপ্রিল অর্থাৎ শুক্রবার হতে পারে। মূলত হিজরী সনের মালগুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। এর জন্য রমজান মাস কত তারিখে বা কোন দিনে শুরু হবে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে বা জানা সম্ভব হয় না।
এর জন্য এখনকার যুগে আধুনিক বিজ্ঞান ও জ্যোতি শাস্ত্রের কল্যাণে অনেক আগে থেকেই রমজান মাস কত তারিখে শুরু হবে তা জানা যায়। জ্যোতি বিজ্ঞানীরা এখন থেকে আগামী ২০২৪, ২০২৫ এবং ২০২৬ সাল পর্যন্ত নতুন চাঁদ কত তারিখ এবং কোন মাসে উঠবে তা সবকিছু হিসাব রেখেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের।
রমজানের ইতিহাস
রমজান এই আরবি শব্দ টা মূলত রামিদা বা আর রামাদ এই শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে যার অর্থ হলো উত্তাপ বা শুষ্কতা। আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নবম মাস হলো রমজান। হযরত মুহাম্মদ (সা) ৬১০ সালের রমজান মাসেই ওহী পেয়ে প্রথম নবী হয়েছিলেন। এই রমজান মাসের রাত্রে যে আয়াতগুলো প্রথম নাযিল হয় সে রাতকে বলা হয় শবে কদর বা লাইলাতুল কদর। রোজার মাসের শেষের দিকে যে ১০ দিন বিজরাত্রি পরে এ রাত্রি এই শবে কদর প্রসিদ্ধ মতে সেটা ২৭ তারিখ ধরে নেওয়া হয় আবার অন্যদিকে আরেকটি মত অনুযায়ী ২৩ তম রাত্রি ও ধরা হয়।
এর জন্য নিশ্চিতভাবে এই রাত্রি পাওয়ার জন্য পুরো বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাই-বোনেরা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এবাদত করে থাকে এবং এই ১০ দিন নির্জনে বা একা একা ইতিকাফ করে থাকেন। বিশ্বজুড়ে মুসলমান ভাই বোনের জন্য রমজান এবং ঈদুল ফিতর যা মুসলিমদের প্রধান দুটি উৎসব। সঠিকভাবে প্রমাণিত না হলেও মতবাদ রয়েছে যে নবী হযরত ইব্রাহিম (আ) এর শরিফা নাযিল হয়েছিল তৎকালীন রমজানের প্রথম দিবসে।
তাওরাত এসেছিল ৬ রমজানে, যাবুর এসেছিল ১২ রমজানে আর ইঞ্জিল এসেছিল ১৩ রমজানে। তবে বিশ্বজুড়ে পুরো একমাস পবিত্র রমজান মাসের রোজা রাখার আদেশ আসে যখন নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এবং তার সাহাবীরা মক্কা থেকে মদিনা হিজরত করেন তারপরে। এটি ছিল হিজরতের ১৮ মাস পরের ঘটনা। যখন চলছিল আরবি সা শাবান মাস। এ রমজান মাস মূলত নাযিল করা হয়েছিল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য। যাতে মানুষ সৎপথে চলাচল করে।
আরো পড়ুনঃ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক - নেটওয়ার্ক এর সুবিধা জেনে নিন
আল্লাহতালা বলেছেন “রমজান মাসে হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সৎ পথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে, লোকে মাছটি পাবে সে এই মাসের রোজা রাখবে।’’ {পবিত্র কুরআন, বাকার ২: ১৮৫} ।
তবে এমন কোন বিষয় আসেনি যে এর আগে কেউ রোজা রাখত না অবশ্যই রোজা রাখত। পবিত্র আল কোরআনে বলা রয়েছে যে, আগের জাতিগুলোর জন্য ও রোজা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল সেটি রমজান না হলেও। তাই আগের মানুষগুলো রমজান এর রোজা রাখত। পবিত্র কোরআনে বলা আছে যে “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যে রূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারো।’’{ সূরা বাকারা: ২: ১৮৩}।
পরবর্তীকালে জানা যায় মক্কার মানুষগুলো পূর্বে রোজা রাখত তবে এটি শুধু মহাররাম মাসের প্রথম দশ দিন, আশুরার রোজা। তখনো কারবালার ঘটনা ঘটেনি, আশুরার প্রধান উপজীব্য ছিলেন হযরত মুসা (আ) এর নেতৃত্বে মিশর থেকে বনী ইসরাঈলের মুক্তি এবং লোহিত সাগর দুই ভাগ হয়ে যাবার ঘটনা। আল্লাহতালা সন্তুষ্টি লাভের জন্য অন্য মানুষগুলো রোজা রাখতো। আবু জান্নাত একজন আরব লেখক ৭৪৭ সালে জানান যে উত্তর ইরাকের আল জাজিরা অঞ্চলে একটি মান্দাইন সমাজ ইসলাম গ্রহণের আগেও রমজান মাসে রোজা রাখত।
মানুষ যারা রোজা রাখতো তারাও নতুন মাসের এবং নতুন বছরের চাঁদ দেখে রোজা রাখত তাই অঞ্চল ভেদে রোজা রাখার সুরও ভিন্ন হত। মেরু অঞ্চলের মানুষগুলো সেখানকার সময় অনুযায়ী রোজা রাখতে পারেন না তাই নিকটস্থ স্বাভাবিক দেশের সময়সূচি অনুযায়ী বা মক্কার সময় অনুযায়ী রোজা রাখেন এবং ইফতার করেন। পুরো বিশ্বজুড়ে রোজা যেমন আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করা হয় তার জন্য অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে তারাবি নামাজ পড়ানো হয় যদিও সেটি বাধ্যতামূলক করেনি বরং সুন্নতে মক্কাদাহ।
আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ যখন রোজা রাখতেন প্রথমদিকে জামাতের সাথে সে নামাজ আদায় করলেও পরে জামাতে করেননি এর ফলে তারাবি নামাজ মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। তবে খলিফা কুমার (রা) পুনরায় জামাতে আদায় শুরু করেন তার শাসনামলে।পুরো বিশ্বজুড়ে এখন ৮ থেকে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করে থাকে কিন্তু মক্কার হারাম শরীফে ২০ রাকাতই আদায় করা হয় এই তারাবির নামাজ।আমাদের বিশ্বে অনেক খ্রিস্টানও রয়েছে যারা রোজা রাখতেন তবে তারা কিছুটা ভিন্ন ভাবে রোজা রাখতেন।
খ্রিস্টানীয় বাইবেলে বর্ণিত যিশুখ্রিস্টান নিজেও একটানা 40 দিন রোজা রেখেছিলেন। আদিম যুগে যারা খ্রিস্টান ছিল তারাও রোজা রাখতেন এটি বাইবেলে প্রমাণ পাওয়া যায়।আমরা আরবিতে সিয়াম বললেও উপমহাদেশে ফার্সি রোজা শব্দটাই বেশি প্রচলিত এই বিশ্বে। আরবি শাওম শব্দ হলো বিরত থাকা।শুধু আমাদের মুসলিম ধর্মেই নয় খ্রিস্টান ধর্ম, ইহুদি ধর্ম কনফুসিও ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, সনাতন ধর্ম, কিংবা যৌনবাধ সকল ক্ষেত্রেই আমাদের এই উপবাসের প্রচলন রয়েছে।
রমজান মাস রোজা রাখা ছাড়াও মুসলমানদের জন্য শাওয়াল মাসের যেকোনো ছয় দিন, প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩ থেকে ১৫ তারিখ, আরাফা দিবস, আশরা দিবস ইত্যাদি দিবসের রোজা রাখার ব্যাপার উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে পবিত্র ঈদের দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে আমাদের ইসলাম ধর্মে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url