আমাদের দেশে যত দিন যাচ্ছে রোগ বেড়েই চলেছে । তার মধ্যে একটি হলো গলগন্ড রোগ। গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা আমাদের দেশে অনেক মানুষ জানে না। গলগন্ড রোগ এবং থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। আমাদের শরীরে যাবতীয় কাজ সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন গ্রন্থি জড়িত আর এই গ্রন্থি শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আমাদের শরীরে থাইরয়েড গ্রন্থি কোন ভাবে বাধা প্রাপ্ত হলে তা ফুলে যায় আর এই ফুলে যাওয়াকে গলগন্ড রোগ বলে।
আমরা অনেকেই গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে তেমন জানিনা।আবার অনেকে ই গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা জানে। যারা জানে না গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি। এবং থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানাবো।
আমাদের শরীরে আয়োডিনের অভাবে এই গলগন্ড রোগ হয়ে থাকে। গলগন্ড রোগ হলে আমাদের গলা অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায়। আপনারা যারা গলগন্ড রোগ থেকে বাঁচতে চান তারা নিচের গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা উপায় গুলো মেনে চললে অনায়াসে গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করতে পারবেন।গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার জন্য আপনাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে তার মধ্যে পালং শাক একটি। যা একটি গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যারা গলগন্ড রোগে ভুগছি।
তাদের জন্য এ রোগটি প্রতিকারের জন্য দশটি মূল ঘরোয়া প্রতিকারের মধ্যে অন্যতম হলো পালং শাক। এই পালং শাক প্রচন্ড পরিমাণে ভিটামিন- এ দ্বারা ভর্তি। যেটি একটি অসুস্থ মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাবার।এই ভিটামিন- এ আমাদের শরীরের গলগন্ড রোগ সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং ভিটামিন- এ থাইরয়েড ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে অন্যতম। আপনাদের শরীরে থাইরয়েড এন্ড্রো ক্রাইন গ্ল্যান্ড বাঘ গ্রন্থি ও থাইরয়েড ক্ষরণের জন্য ভিটামিন -এ ব্যবহার করে।
এর জন্য আপনারা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন পালং শাক গলগন্ড রোগের চিকিৎসার জন্য কতটা উপকারী এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য। তাই আপনারা গলগন্ড রোগ হলে বেশি বেশি করে পালং শাক খান। যা গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার মধ্যে একটি।
কেল্প
কেল্প থাইরয়েড বা গলগন্ড রোগের নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই কেল্প একটি আয়োডিনযুক্ত সমুদ্র শৈবাল যা থাইরয়েড বা গলগন্ড রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এর জন্য আমরা যারা প্রতিদিন খাবার খাই খাবারের সাথে স্যালাড বা সুপের সাথে মিশিয়ে আপনারা আপনাদের খাবারে তালিকায় রাখতে পারেন। যা থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কোকোনাট তেল
থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ যখন অতিরিক্ত বেড়ে যায় তখন একই সঙ্গে ইন্ট্রোজেনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় যা থাইরয়েড গ্রন্থির চলাচল কে বাধা দেয়। আপনি যদি প্রতিদিন নারিকেল তেল এক চামচ এবং দুধ এক কাপ নিয়ে দুটিকে মিশিয়ে সেবন করেন তাহলে অতিরিক্ত মাত্রায় এন্ট্রোজেনের উৎপাদন কে কমিয়ে আনে এবং দেহের বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি করে। ফলে আপনার শরীরে সঞ্চিত মেদ শক্তিতে রূপান্তর হয়ে যায়।
এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন থাইরয়েড বা গলগন্ড নিরাময়ের জন্য এক কাপ দুধের সাথে এক চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে প্রতিদিন খেতে হবে যা থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে অন্যতম।
হলুদ এর কাজ
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত যা সব দিক দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে। আর এই ভারতের মানুষ বেশিরভাগ খাবারের মধ্যে হলুদ একটি প্রচলিত মসলা। এই হলুদে কারকিউমিন রয়েছে যা থাইরয়েড বা গলগন্ড গ্রন্থির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এর জন্য গলগন্ড রোগের সমস্যা দূর করতে হলুদ একটি খুবই কার্যকরী মসলা। আর এই হলুদ থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে একটি।
গলগন্ড রোগে লবণের ব্যবহার
আমাদের প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে লবণ থাকে যা একটি আয়োডিন সমৃদ্ধ মসলা। এই লবণ থাইরয়েড ক্ষরণকে নিয়ন্ত্রণ রাখে। গলগন্ড রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার মধ্যে লবণ একটি। তাই আপনাদের রান্না ঘরে কিছু মসলা আছে যা থাইরয়েড বা গলগন্ড রোগের সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।আবার আখরোট একটি ড্রাই ফুড। এই আখরোট প্রায় সব রান্না ঘরেই দেখা যায়। আখরোট ম্যাগনেসিয়াম ও আয়োডিনের সমৃদ্ধ যেটি থাইরয়েড কারণে সাহায্য করে। এর জন্য আখরোট থাইরয়েড বা গলগন্ড রোগ নিরাময়ের আরেকটি ঘরোয়া পদ্ধতি।
থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে আদার কাজ
আদার মধ্যে রয়েছে জিনজেরল যা প্রদাহ নিরাময় হোক হিসাবে পরিচিত। জিনজেরল থাইরয়েড প্রদাহ উপসমের খুবই কার্যকরী। এর জন্য বলা যায় থাইরয়েড ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে আদাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডিমের কুসুম
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডিম থেকেই থাকে। আর এই ডিমের কুসুম একটি কপার সমৃদ্ধ খাবার। যা আমাদের গলগন্ড রোগের গ্রন্থিগুলোকে মসৃণ রাখে। তাই গলগন্ড রোগ নিরাময় করতে খাদ্য তালিকায় ডিমের কুসুম রাখুন যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গলগন্ড বা থাইরয়েড হলে যোগব্যায়াম
থাইরয়েড এর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আমরা উপরে বিস্তারিত জেনেছি। আমরা যারা থাইরয়েড বা গলগন্ড রোগে ভুগি অনেকেই জানে না কি ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। যোগ ব্যায়ামের জন্য কিছু নির্দিষ্ট আসন থাইরয়েডের সমস্যা সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর জন্য যোগ ব্যায়াম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের সাহায্যে করা উচিত ফলে যোগ ব্যায়ামের কোন ধরনের সমস্যা হবে না।
গলগন্ড রোগ বা থাইরয়েড হলে করণীয়
থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে অন্যতম কাজ হল নিজেকে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখা। অতিরিক্ত মানসিক চাপের মাধ্যমে এ গলগন্ড রোগ আরো বেড়ে যেতে পারে। আমরা যারা ধূমপান করে থাকি এই ধূমপান থাইরয়েড রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। ধূমপানের কারণে থাইরয়েডের কাজগুলো সম্পন্ন হয় না। এর জন্য ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা গলগন্ড রোগে ভুগছেন তারা ভালো কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বাইরের কোন লোকাল ওষুধ খাবেন না।
দৈনন্দিন খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে থাইরয়েড এর ওষুধ সেবন করতে হবে। ফাইবার যুক্ত কোন খাবারের সঙ্গে এ ওষুধ খাওয়া যাবেনা। ফুলকপি বাঁধাকপি ও ব্রকলি এ ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
শেষ কথা
থাইরয়েড হলো একটি গ্রন্থি যা আমাদের শারীরিক বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমন: থাইরয়েডিজম ও হাইপার থাইরয়েডিজম। এই দুই ধরনের রোগ অনেক মারাত্মক একটি রোগ। উপরে থাইরয়েডের ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url