OrdinaryITPostAd

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সূরা বিস্তারিত জানুন

আসসালামু আলাইকুম, আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আর এই সৃষ্টি করার কারণ হলো আল্লাহ তাআলার এবাদত করা। তাই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। অনেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে তেমন কিছু জানেনা। এর জন্য আমরা আজকের এই পোস্টটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।পৃথিবীর মধ্যে মানুষ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ জীব। আল্লাহ তায়ালা আমাদের যেহেতু পৃথিবীতে পাঠিয়েছে সেহেতু আমাদের উচিত আল্লাহতালাকে বিশ্বাস করা এবং আল্লাহ তাআলার ইবাদতে মশগুল থাকা।
আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী রাসূলগণকে আমাদের সঠিক পথ নির্ধারণের জন্য পাঠিয়েছে। তাই সেই পথ অনুযায়ী আমরা আজকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। এবং যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে ও সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না তারা অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি পড়বেন।

সূচিপত্রঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ভূমিকাঃ

পুরো পৃথিবীর মধ্যে ইসলাম ধর্ম হলো সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ইসলাম ধর্মকে টিকিয়ে রাখার জন্য আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসূলগণকে পাঠিয়েছেন। নবী-রাসূলগণ আমাদের সঠিক পথ দেখানোর জন্য মূলত এসেছিলেন। এবং তারা সঠিক পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। ইসলাম ধর্মের সূত্র অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালাকে খুশি রাখার জন্য পাঁচটি রুকন অর্থাৎ প্রধান জিনিস রয়েছে। 

আর সেই জিনিসগুলো ঈমানের পর সর্বশেষ্ঠ আমল হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। আল্লাহ তায়ালা নামাজ আমাদের মাঝে এত সহজ করে দিয়েছেন যেন সবাই নামাজ আদায় করে কিন্তু অনেক মুসলমান ভাই-বোনেরা আছে যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না। আবার অনেকে আছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম সম্পর্কেও তেমন ধারণা নেই। 

এর জন্য আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলঃ
  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • পেশা

ফজর নামাজ পড়ার নিয়মঃ

ফজরের নামাজ মূলত দুই রাকাত সুন্নত নামাজ এবং দুই রাকাত ফরজ নামাজ। ফরজের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ এবং দুই রাকাত ফরজ নামাজ কিভাবে পড়বেন এবং কিভাবে নিয়ত বাঁধবেন সেই সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলঃ

দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়তঃ

দুই রাকাত সুন্নত নামাজের জন্য সর্বপ্রথম অজু করে আল্লাহ তায়ালার ঘর অর্থাৎ মসজিদে গিয়ে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে। তারপর আল্লাহু আকবার বলে তাকরিমে তাহরিমা অর্থাৎ দুই হাত বাঁধতে হবে। এরপর পবিত্র আল কুরআনের সানা ছানা পড়তে হবে। ছানা বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ নিম্নরূপঃ

ছানাঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওতাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা, ওয়া লা ইলাহা গইরুক।

অর্থঃ‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকারের কোনো মাবুদ নেই”। 
  • এরপর বিসমিল্লা ও আউযুবিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে। এরপর আবার বিসমিল্লাহ বলে ছোট সূরা পড়তে হবে। অবশ্যই আপনাকে সূরা গুলোর নিঃশব্দে পড়তে হবে।
  • এরপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে গিয়ে ‘‘সুবহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আজিম” কমপক্ষে তিনবার পড়তে হবে।
  • এরপর ‘‘সামি আল্লাহু লিমান হামিদা” পাঠ করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পর বলতে হবে ‘‘রাব্বানা লাকাল হামদ”।
  • এরপর আল্লাহু আকবার বলে সেজদায় চলে যেতে হবে। সম্পূর্ণরূপে খেয়াল রাখতে হবে সবার আগে যেন হাঁটু জমিনে লাগবে এবং তারপর দুই হাত ও শেষে নাকো কপাল লাগবে।
  • সিজদাতে গিয়ে কমপক্ষে তিনবার ‘‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়তে হবে। তারপর পাঠ করা শেষ হলে আল্লাহু আকবার বলে বসবেন। দুই থেকে তিন সেকেন্ড অপেক্ষা করে আবার আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় চলে যাবেন। এবং প্রথম সেজদার মত দ্বিতীয় সেজদা সম্পন্ন করবেন।
  • দ্বিতীয় সিজদা শেষ হলে আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে কেবলামুখী দিকে দাঁড়াবেন। তারপর প্রথম রাকাতের মতন করে আবারো নিঃশব্দে সূরা ফাতিহা এবং অন্য যেকোনো সূরা পড়ে রুকু এবং সিজদা সম্পূর্ণ করবেন।
  • দ্বিতীয় সিজদা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে বসে থাকবেন। এ বসে থাকাকেই বলে আখেরি বৈঠক। বসে থাকা অবস্থায় সূরা তাশাহুদ পাঠ করবেন।

তাশাহুদঃ ‘‘আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্ ত্বায়্যিবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, আসসালামু আলাইনা ওয়া ‘আলা ইবাদিল্লাহিস সলিহিন, আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু”

অর্থঃ সকল সম্মান, সকল উপাসনা ও সকল পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর সকল অনুগ্রহ ও সমৃদ্ধি নাযিল হোক। শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের উপরে ও আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মোহাম্মদ সাঃ তার বান্দা ও রাসূল।

তাশাহুদ পাঠ করার পর দুরুদ শরীফ পাঠ করবেন।

দরুদ শরীফঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ,আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ

এরপর দোয়া মাসুরা পড়বেন।

দোয়া মাসুরা উচ্চারণঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নি যালামতু নাফসি যুলমান কাসিরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয জুনূবা ইল্লা আন্তা, ফাগফির লি মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনি ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রহিম”।

আরো পড়ুনঃ শাবান মাসের ফজিলত - শাবান মাসের আমল

দোয়া মাসুরা পড়া শেষ হলে প্রথমে ডান দিকে ‘‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” পাঠ করে সালাম ফেরাবেন। অতঃপর বাম দিকে ঘুরে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।

উপরোক্ত নিয়মে আপনি আপনার ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ শেষ করবেন। তারপর দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। নিম্নে দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত দেওয়া হলোঃ

দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়তঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”। 

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন। উপরোক্ত দুই রাকাত সুন্নত নামাজ যেমন ভাবে পড়েছেন তেমনভাবে ফরজ নামাজ পড়তে হবে কিন্তু কিছু পরিবর্তন আছে। পরিবর্তনগুলো নিম্নরূপঃ

  • আপনারা যেহেতু ফরজ নামাজ পড়বেন সেহেতু ফজরের ফরজ নামাজের নিয়ত হতে হবে।
  • এই ফজরের ফরজ নামাজ পড়ার সময় সূরা গুলো উচ্চস্বরে পড়বেন।
  • উপরোক্ত সুন্নত নামাজ যেভাবে পড়েছেন এবং তাসবীহ আদায় করেছেন ঠিক একই ভাবে ফরজ নামাজে তাসবীহ আদায় করতে হবে।

আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনি ফরজ নামাজ এর নিয়ম ও নিয়ত শিখতে পেরেছেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এখনো পড়েন না তারা অবশ্যই আজ থেকে পড়া শুরু করুন।

জোহর নামাজ পড়ার নিয়মঃ

জোহরের নামাজ মূলত প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নত এরপর ৪ রাকাত ফরজ এবং সর্বশেষে ২ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় পড়তে হয়। চলুন জেনে নেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম এর মধ্যে জোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে।

চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায়ের নিয়মঃ
যোহরের প্রথম চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত হলঃ “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লা তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার’’। 

এই দোয়াটি পড়ে সুন্নত নামাজের নিয়ত বাঁধবেন।

  • এরপর প্রথম দুই রাকাত নামাজের শেষ বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পাঠ করবেন।
  • এরপর তাশাহুদ পাঠ করা শেষ হলে আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন। তারপর উপরোক্ত নামাজের নিয়ম শেখানো অনুযায়ী নামাজ পড়তে শুরু করবেন। এই চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার সময় প্রতিটির আঘাতে সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত করতে হবে।
  • এরপর চতুর্থ রাকাত শেষ করে সেই বৈঠকে বসে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ, এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে। অতঃপর ‘‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে প্রথমে ডান পাশে সালাম ফেরাতে হবে এবং শেষে বাম পাশে সালাম ফেরাতে হবে।
  • উক্ত নিয়মে যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ শেষ করবেন। এবং পরবর্তীতে চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।

চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়মঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি ফারজুল্লাহি তাআল মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”। 

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন।

উপরোক্ত যোহরের  চার রাকাত সুন্নত নামাজ যেমন ভাবে আপনি আদায় করেছেন তেমনি ভাবে আদায় করতে হবে কিন্তু ফরজ নামাজে কিছু পার্থক্য রয়েছে।

  • যোহরের ফরজ নামাজ পড়ার আগে উচ্চস্বরে একামত দিতে হবে।
  • নিঃশব্দে সূরা গুলো তেলাওয়াত করতে হবে। তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে শুধু সুরা ফাতিহা তেলাওয়াত করতে হবে।
  • চতুর্থ রাকাতের শেষ বৈঠকে দোয়াগুলো পড়ে সালাম ফেরাতে হবে। অতঃপর আপনাকে নামাজ সম্পন্ন করতে হবে।
যোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়মঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকায়াতাই সালাতিজ জোহরি সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”।

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন।

এরপর উপরোক্ত ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ যেভাবে সম্পন্ন করেছেন ঠিক একই ভাবে জোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ সম্পন্ন করতে হবে।

আসরের নামাজ পড়ার নিয়মঃ

আসরের নামাজে চার রাকাত ফরজ নামাজ রয়েছে। কিন্তু ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। এই সুন্নত নামাজ না পড়লে কোন গুনাহ হয় না। নিম্নে আসরের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত দেয়া হলো।

আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবাআ রাকায়াতি সালাতিল আছরি ফারজুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”। 

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন। উপরোক্ত জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ যেভাবে পড়েছেন একইভাবে আসরে চার রাকাত নামাজ সম্পন্ন করতে হবে।

মাগরিব নামাজ পড়ার নিয়মঃ

মাগরিবে সাধারণত তিন রাকাত ফরজ নামাজ এবং দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতে হয়।

মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাকয়াতি সালাতিল মাগরিব ফারজুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”। 

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন। মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজে কিছু ভিন্নতা রয়েছে।

  • মাগরিবের ফরজ তিন রাকাত নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সূরা গুলো উচ্চ স্বরে তেলাওয়াত করতে হবে।
  • তৃতীয় রাকাতে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।
  • উপরোক্ত শেষ বৈঠকে দেখানো দোয়া গুলো পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়মঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল মাগরিবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”।

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন। এরপর উপরোক্ত ওয়াক্তর দেখানো দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ম অনুসারে মাগরিবের দুই রাকাত নামাজ সম্পন্ন করবেন।

এশার নামাজ পড়ার নিয়মঃ

এশার নামাজ প্রথমে চার রাকাত ফরজ,দুই রাকাত সুন্নত এবং তিন রাকাত বিতর নামাজ। নিম্নে এশার নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত দেওয়া হলোঃ

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”। 

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন। আপনি উপরোক্ত জোহর ও আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ  যেভাবে আদায় করেছেন ঠিক একই ভাবে এশার চার রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। শুধু এশার ফরজ নামাজে দুইটি পার্থক্য রয়েছেঃ

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতর - রমজান মাসের কত তারিখ ঈদ

  • নিয়ত বাধার সময় এশার নামাজের নিয়ত বাঁধতে হবে।
  • এশার নামাজের প্রথম দুই রাকাত উচ্চস্বরে সূরা গুলো পাঠ করতে হবে। 
দুই রাকাত সুন্নত নামাজঃ
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকায়াতি সালাতিল এশায়ি সুন্নাতু রাসুূলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার”।

এই দোয়াটি পড়ে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত বাঁধবেন।ফরজ নামাজের নিয়ত বাঁধার পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত তুলে দুই হাত বাঁধবেন। উপরোক্ত বর্ণিত দুই রাকাত সুন্নত নামাজ এর পড়ার নিয়ম অনুযায়ী এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ সম্পন্ন করবেন।

তিন রাকাত বেতের নামাজ পড়ার নিয়মঃ
‘‘নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা ছালাছা রাকায়াতি সালাতিল বিতরি ওয়াজিবুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার ”। 

দোয়াটি পড়ে তিন রাকাত বেতের নামাজ পড়ার জন্য আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত বাঁধবেন। উপরোক্ত মাগরিব এর তিন রাকাত ফরজ নামাজ যেভাবে পড়েছেন একইভাবে বিতে তিন রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে কিন্তু এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।

  • বেতের নামাজ পড়ার সময় নিঃশব্দে সূরা গুলো পাঠ করতে হবে।
  • বেতের নামাজে তিন নাম্বার রাকাতের সময় সুরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য একটি সূরা পড়তে হবে।
  • বেতের নামাজের তৃতীয় রাকাত এ সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা পড়ার পর আল্লাহু আকবার বলে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে আবার হাত বাধতে হবে। 
  • তৃতীয় রাকাতে হাত বাধার পর দোয়া কুনুত পড়তে হবে এবং এটি একটি ওয়াজিব।
  • শেষ বৈঠকে যাওয়ার পর সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।

মোনাজাত করার নিয়মঃ

‘‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাও ওয়াফিল আখিরাতি হাছানাতাও ওয়া কিনা আযাবান্নার। ওয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলা খাইরি খালক্বিহি মুহাম্মাদিও ওয়া আলিহি ওয়াআছহাবিহি আজমায়ীন, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন’’

শেষ কথাঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম

আমরা আজকের এই পোস্টটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সূরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন। যারা নামাজ পড়া জানেন না বা এখনো নামাজ পড়েন না তারা অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটিতে উল্লেখিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম অনুসারে নামাজ পড়বেন। আমাদের এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪