সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - সুইস ব্যাংক বাংলাদেশ
পেজের সূচিপত্র
সুইচ ব্যাংক ভূমিকাঃ
সুইস ব্যাংক শব্দটি এসেছে সুইজারল্যান্ড থেকে। আর এই সুইস ব্যাংক বলতে বোঝানো হয় সুইজারল্যান্ডের যেকোনো ব্যাংকে। যেকোনো একটি নির্দিষ্ট ব্যাংকে বোঝানো হয় না এই সুইস ব্যাংক। সুইস ব্যাংকে সাধারণত একটি ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক নির্দেশ করা হয়। আপনারা যারা বাংলাদেশ ব্যাংক বলতে যা বোঝেন সুইস ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরূপ। এই সুইস ব্যাংকের হিসাব ও অন্যান্য সাধারণ ব্যাংকের হিসাবের মতনই।
এই সুইস ব্যাংকের একটি শুধু তফাৎ তাদের গ্রাহকদের গোপনীয়তা সর্বক্ষণে কঠোরভাবে রক্ষা করে থাকে। আর এই সুইস ব্যাংক গুলোকে সুইস ফেডারেল ব্যাংকিং কমিশন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আপনি যদি চান আপনার টাকা পয়সার কথা কেউ জানতে না পারে তাহলে আপনি এই সুইস ব্যাংকে একাউন্ট খুলে আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারবেন।
সুইস ব্যাংকের ইতিহাস
সুইস ব্যাংকে একাউন্ট আছে মানেই নিজেকে অনেক নামিদামি মনে হয়। এই সুইস ব্যাংক নিয়ে সাধারণ মানুষের একাউন্ট খোলার অনেক আগ্রহ জন্মে যায়। বর্তমানে সুইস ব্যাংক বলে কোন ব্যাংক কই নেই। সুইস ব্যাংক নামে ১৮৫৪ সালে ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত এই সুইস ব্যাংক ছয়টি ব্যাংক মিলে একত্রে প্রতিষ্ঠানটি খোলা হয়। কিন্তু শোনা যায় ১৯৯৮ সালে এই ব্যাংকটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এখানে থাকা কোটি কোটি টাকা গুলো তার এক কোণাও নষ্ট হয়নি।
আরো পড়ুনঃ জরুরি মুহূর্তে অনলাইন লোন - অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
কারণ পরবর্তীতে সুইজারল্যান্ডের সকল ব্যাংকের অধীনে আবার নতুন করে ১৯৯৮ সালে সুইস নামে একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা শুরু হয়। বর্তমান বিশ্বে সুইজারল্যান্ডে প্রায় ৩০০ এর বেশি ব্যাংক আছে যা গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য সুইস ব্যাংক সারা বিশ্বের কাছে একটি জনপ্রিয় ব্যাংক। সুইজারল্যান্ড এর ব্যাংকের প্রায় ৩০০ বছর আগে থেকেই গুগল একাউন্ট খুলে টাকা পয়সা জমা রাখার ব্যবস্থা ছিল। আগের যুগের রাজাদের সঞ্চিত টাকা পয়সা গোপন রাখার প্রবণতা থেকেই এই সুইস ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৭০ দশকের শুরু থেকেই জেনেভা কে কেন্দ্র করে আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। ১৭১৩ সালে স্টেট কাউন্সিল অফ জেনেভা ব্যাংকিং এর নীতিমালা স্টেট কাউন্সিল অফ প্রকাশ করা হয়েছিল। এ নীতিমালা অনুসারে কেবলমাত্র গ্রাহক ছাড়া অন্য কারো কাছে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্ট এর তথ্য জানানো একদমই নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৩৪ সালে ফ্রান্স সরকার বিলুপ্ত হওয়ার পরে প্যারিসে সুইস ব্যাংকের সমস্ত নীতিমালা এবং নথিপত্র জব্দ করে এক বড় ধরনের অংকের সন্ধান মিলে সেই নীতিমালা এবং নথিপত্র থেকে।
এর জন্য সুইস ব্যাংক তাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ১৯৩৪ সালে আইন সংশোধন করে তৈরি করা হয় ফেডারেল ব্যাংক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান সরকার টাকা পয়সা নিতে রাজি হচ্ছিল না এর জন্য তাদের লাভ করা ধন-সম্পদের ট্রান্সফার হয় সুইস ব্যাংকে। সুইজারল্যান্ডে অর্থনীতির ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী সেখানে রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ড না থাকায় তারা শুধু তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নজর দিতে পেরেছে।
পরবর্তীতে সুইস ব্যাংক তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আরো গতিশীল করতে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর জন্য আমরা আপনাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। চলুন জেনে নেই আপনি সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। আপনারা যারা সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনিও শিখে যাবেন সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম। নিম্নে সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
সুইস ব্যাংকে ১৮ বছর বয়স এবং একটা বৈধ পাসপোর্ট হলেই একাউন্ট খোলা যায়। এখানে এমন কোন রকম পলিসি নাই যে আপনাকে উচ্চবিত্ত কিংবা আভিজাত পরিবারের হতে হবে। শুধুমাত্র এখন খোলার জন্য আপনার কাছে পাঁচ হাজার টাকা সুইচ ফ্রা থাকলেই সুইচ ব্যাংকের একাউন্টের মালিক হতে পারবেন। বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিকগণ এই সুইচ ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবে।
আরো পড়ুনঃ কৃষি ব্যাংক অনলাইন - কৃষি ব্যাংক সুযোগ সুবিধা
সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য বিদেশি নাগরিকগণের স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য আবেদন করতে হবে। সুইস ব্যাংকে এ একাউন্ট করার জন্য প্রথমত আপনাকে এক লক্ষ ডলার কমপক্ষে ইনভেস্ট করতে হবে। আপনার নতুন একাউন্ট খোলার জন্য আপনার সমস্ত তথ্য এবং ধন সম্পদের উৎস প্রয়োজন পড়বে।
যে ব্যক্তির বৈধ পাসপোর্ট থাকবে সেই শুধু এই সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে। উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনার ধারণা থাকে তাহলে আপনি অনায়াসে সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
সুইচ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের নিয়ম
বিশ্বের অধিকাংশ বিদেশি নাগরিকরা টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতিদিন সুইস ব্যাংক একাউন্টের হিসাব ব্যবহার করে না। আপনিও চাইলে সুইস ব্যাংক থেকে ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন। কিন্তু সুইস ব্যাংকের মূল ব্যবস্থাপনা হল গ্রাহকদের গোপনীয় তথ্যগুলো রক্ষা করা। আপনি যদি প্রকাশ্যে ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তাহলে আপনার গোপনীয়তা ভঙ্গ করা হবে। আবার আপনি যদি কোন ব্যাংকে চেক ইস্যু করেন সেটির ক্ষেত্রেও আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে না।
এর জন্য আপনাকে এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে। সবার থেকে এই একাউন্টের বিষয়ে তথ্যগুলো গোপন রাখতে হবে। উপরোক্ত বিষয়গুলো দ্বারা সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম হয়তো আপনি এতক্ষণে বুঝে গেছেন। সুইস ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম খুবই সহজ কিন্তু আপনাকে তাদের কিছু প্রাইভেসি মেনে চলতে হবে।
সুইচ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও আইন
ব্যাংকের যাবতীয় তথ্য এবং হিসাব পত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেকোনো সময়ে তা পেতে পারেন। প্রত্যেকটি ব্যাংকের অধিকাংশ দেশের ব্যবস্থাপোনাটা ঠিক এমনই। কিন্তু সুইচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা একদমই ভিন্ন ধরনের। সুইচ ব্যাংকের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা কোনভাবেই সুইস ব্যাংকের হিসাবের তথ্যগুলো প্রকাশ করতে পারেনা। কর্মচারীরা সুইস ব্যাংকের সকল তথ্য প্রকাশ করতে পারে না তার কারণ হলো সুইস সরকারের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে।
১৯৩৪ সালে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী যাতে সুইচ ব্যাংকের হিসাবের কোন তথ্য প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য একটি আইন করা হয়েছিল। এর জন্য আইনের বাইরে তথ্য প্রকাশ করতে হবে এরকম কিছু বাধ্যতামূলক ছিল অবশ্যই। এরকম কিছু বাধ্যতামূলক নাথ থাকলে বিদেশি অপরাধীরা সহজেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। তারা যেন কোন রকমের কর ফাঁকি না দেয় তার জন্য সুইস ব্যাংকারস অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যার ফলে যে কোন ক্ষেত্রেই সুইস ব্যাংকের হিসাব এর তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
আপনি যদি দেওয়ানি মামলা বা বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা অথবা অপরাধ সম্পৃক্ততা বা বা মানি লন্ডারিং কর ফাঁকি ইত্যাদি এমন কিছু কাজ যা সুইস ব্যাংকের আইনের অপরাধযোগ্য সেই ক্ষেত্রে আপনার সকল তথ্য দিয়ে দেওয়া হবে। এর জন্য আপনাকে এই ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে হবে তাহলে আপনার তথ্যগুলোর গোপনীয়তা থাকবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url