পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম - পেঁপে খাওয়ার ঔষধি গুণ
সূচিপত্র
ভূমিকা ঃ পেঁপে খাওয়ার ঔষধি গুণ
সবজি হিসেবে কাঁচা পেঁপে কিংবা ফল হিসেবে পাকা পেঁপে মধ্যে রয়েছে নানাবিদ স্বাস্থ্য উপকারিতা। এমনকি পেঁপের বীর্য পুষ্টিগুণ ভরপুর। তবে এগুলোর চাইতে পেঁপের পাতার রস শরীরের জন্য বেশ উপকারী। পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম আমাদের প্রত্যেকেরই জানা উচিত। পেপে পাতার রসে বিভিন্ন রোগ দমন করার শক্তি রয়েছে। পেঁপের প্রত্যেকটি অংশই আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। যেমন কাঁচা পেঁপে, পাকা পেঁপে, পেঁপের আঠা, পেপের শিকড় এমনকি পেপে পাতার রস আমাদের জন্য অনেক অনেক বেশি উপকারী।
আরো পড়ুনঃ পেঁয়াজের তেল বানানোর নিয়ম - পেঁয়াজের তেলের উপকারিতা
আমরা অনেকেই জানিনা যে পেপে পাতা রস খাওয়া যায়। এটাই আমাদের ভুল ধারণা।পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম জানা থাকলে আপনি খুব সহজে ঘরে বসে বানিয়ে ফেলতে পারবেন। এটি একটি ঘরোয়া ওষুধ বললেও ভুল হবে না। পেপে পাতার রস লিভারের জন্য অনেক উপকারী এবং অনেক সময় হজমে সহায়তা করে এমনকি রক্তের শর্করার মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। আমরা অনেকেই পেঁপের ইংলিশ নাম জানিনা পেটের ইংলিশ নাম হলো পাপায়া।
আমরা ইউটিউবে অথবা ফেসবুকে বিভিন্ন ভিডিও দেখে থাকি কিন্তু আমাদের অবশ্যই ফেসবুক এবং ইউটিউব এর মাধ্যমে পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম অবশ্যই জেনে রাখা।
পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম
আমরা অনেকেই পেঁপে ফল খেয়ে থাকি। আমরা অনেকেই জানি কাঁচা পেঁপে এবং পাকা পেঁপে খাওয়া যায়। কিন্তু পেঁপে পাতার রস খাওয়া যায় সেটা অনেকেরই না জানা। চলুন আজকে আমরা কিভাবে পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানি। প্রথমে আপনাকে দুই থেকে তিনটা পেঁপে পাতা ভালো করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। তারপর ব্লেন্ডারে দিয়ে সামান্য জল মিশিয়ে তৈরি করে ফেলতে হবে পেঁপে পাতার রস।
আমাদের যেমন প্রত্যেকটি মানুষের মুখের স্বাদ এক নয় ঠিক তেমনি সেই পাতার রসের মধ্যে অল্প পরিমাণে চিনি অথবা লবনও ব্যবহার করতে পারবেন। অতিরিক্ত পেঁপে পাতার রস খাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। দিনে অল্প পরিমাণে তিনবার খাওয়াই যথেষ্ট। এতে শরীর সুস্থ থাকবে এবং বিভিন্ন রোগ দূর হবে।
পেঁপের উপকারিতা
পেঁপে আমাদের শরীরের জন্য একটি উপকারী ফল। এটি একটি খুবই সুস্বাদু ফল। পেঁপে পাকা ফলটি খুবই রসালো এবং মিষ্টি হয়। কাঁচা পেঁপেও খাওয়া যায় পেঁপে যেমনই থাকুক না কেন সব পেঁপেতে ভিটামিন রয়েছে। পেঁপে সালাত করে তেঁতুল মরিচ দিয়ে মাখিয়ে কিংবা সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয় কাঁচা পেঁপে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। বিভিন্ন রকম রোগ সারাতে কাঁচা পেঁপে খুবই উপকারী অন্যান্য ফলের তুলনায় ক্যারোটিন অনেক বেশি থাকে।
এতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় যাদের মেদ সমস্যা রয়েছে তারা অনায়াসে খেতে পারবেন। পেঁপে ফলের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।পেঁপেতে রয়েছে আন্টি অ্যামোবিক ও আন্টি প্যারাসিটিক বৈশিষ্ট্য যা অন্তের চলাচল কে নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়াও পেঁপেতে কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, এসিড রিফ্লাক্স, অন্তের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক ও পেটের আলসার সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এদের পুষ্টিগণের মধ্যে ব্রণ ও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ত্বকের ছিদ্র মুখগুলো খুলে দেয় এই পেঁপে ফল।
বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।। কাঁচা পেঁপে ত্বকের মরা কোষগুলোকে পুনরায় জীবিত করে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়া ব্লাড প্রেসার ঠিক রাখার পাশাপাশি রক্তের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। শরীরের ভেতরে ক্ষতিকর সোডিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। কাঁচা পেঁপে খাওয়ার ফলে শরীরের হৃদরোগের সমস্যা সহজে দূর করে দেয়। পেঁপের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। ভিটামিন এ আপনাকে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
যারা দৃষ্টি শক্তিতে ছেন তারা নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে উপকার পাবেন।তাছাড়া পেঁপে ফলের মধ্যে আপনি আরও একটি ভিটামিন সি পেয়ে যাবেন। পেঁপের পুষ্টিগুণ মেয়েদের জন্য খুবই প্রয়োজন। মেয়েদের যেকোন ব্যথা কমাতে পেতে খুবই কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। পেঁপের পাতাতেও অধিক পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে যা আপনার শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম জানা থাকলে আপনার জন্য খুবই উপকারী।
রোগ সংক্রমণে কাঁচা পেঁপের ব্যবহার
- প্রতিদিন দুপুরে এবং রাতে ভাত খাওয়ার পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খাওয়ার পর এক গ্লাস পানি খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয় এবং বদহজমের কষ্ট দূর হয়
- ২ চামচ কাঁচা পেঁপের আঠা এবং দুই চামচ চিনি মিশিয়ে কিছু শব্দ ধরে দিনে তিনবার করে খেলে দিলের আয়তন ক্রমশ বেড়ে যায়
- ১৫ ফোটা করে কাঁচা পেঁপের আঠা প্রতিদিন অল্প পরিমাণে জলে মিশিয়ে খেতে হবে। 15 দিন খেলে চর্মরোগ ও কৃমি দূর হয়
- ২০ ওটা কাঁচা পেঁপে আঠা অল্প পরিমাণ চিনি সঙ্গে মিশিয়ে একমাস নিয়মিত খেলে পিলে রোগ ও পেটের টিউমার এবং বায়ু রোগ দূর হয়
- দুই চামচ পেতে আঠায় এক চামচ চিনি মিশিয়ে দুধের সঙ্গে ২০ দিন খেলে অম্বল বা অজীর্ণ রোগ দূর হয়
- যে সকল মেয়েদের কিছুদিন আগে বাচ্চা হয়েছে তারা কাঁচা পেঁপের তরকারি নিয়মিত খেলে তাদের স্থানের দুধ বৃদ্ধি পায়
- ঔষধ হিসেবে কাঁচা পেঁপের কোন পাকা পেঁপের চেয়ে বেশি। এতে পেপটিন বা পেঁপে রাখার গুণ অসীম
- গর্ভবতী মহিলা এবং যে সকল মেয়েদের মাসিক বেশি হয় তাদের পেপে খাওয়া উচিত নয়
- কাঁচা পেঁপের বীজ কৃমি দূর করতে সহায়তা করে
- ১ চামচ পেঁপে আঠায় চিনি মিশিয়ে ২ সপ্তাহ খেলে অজীর্ণতা প্রতিরোধ করে
- পেঁপের বীজ মেয়েদের জন্য ঋতু নিয়মিত করেন এবং গর্ভপাত হয়
- পেটের পাতা পানিতে সিদ্ধ করে ৪ সপ্তাহ চায়ের মতো করে তৈরি করে খেলে হৃদরোগের জন্য উপকারী
- পেঁপের পাতা এক মাস খেলে হার্ট সফল হয় এবং ৪ তিন খেলে জ্বরনাশ হয়
পেঁপে খাওয়ার ঔষধি গুণ
পেঁপে ফল শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। ফলটি আপনি আপনার বাড়ির আশেপাশে খুব সহজে পেয়ে যাবেন। এই ফলটির মধ্যে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পেঁপে খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করতে পারবেন। পেঁপে এমন একটি কাজ যার প্রায় প্রতিটি অংশই যেমন পাতা,ফুল,ফল বীজ এমনকি সে কর ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁত সাদা করার উপায়
পেপের মধ্যে রয়েছে পেপেইন নামক রাসায়নিক পদার্থ।যা রান্নায় মাংস সেদ্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই ফল দিয়ে ডায়াবেটিস, ব্লাড সুগার, ক্যান্সার, ডেঙ্গুজোর সহ আরো নানা রোগের চিকিৎসা করা হয়। এখনো চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রমাণিত নয়।নিজে পেঁপে খাওয়ার ঔষধি উদাহরণগুলো দেওয়া হলোঃ
ব্লাড সুগার লেভেল
ডায়াবেটিক রোগীদের নিয়মিত পেপে পাতার রস খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তার। কারণ এই পেপে পাতার রস ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক রাখতে সহায়তা করে। পেপে পাতার রসে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ
ডেঙ্গু প্রতিরোধ চেষ্টা করার পরেও হাজারো মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পেঁপে পাতার রস খাওয়ার পরামর্শ দেয় ডাক্তার। কারণ ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট কমতে শুরু হয়। পেপে পাতার রসে অধিক পরিমাণে প্লাটিলেট থাকে যার কারণে এটি ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। তাছাড়া পেপে পাতায় অধিক পরিমাণে এন্টি ম্যালেরিয়া উপাদান পাওয়া যায়। যা ডেঙ্গুর পাশাপাশি ম্যালেরিয়া সরিয়ে তুলতে সক্ষম হয়।
ক্যান্সার
প্রেমের পাতায় থাকা অ্যাসিটোজেনিন যৌন এন্টি ক্যান্সার উপাদান। পেঁপের পাতায় থাকা এনজাইমগুলো লিভার ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। পেপে পাতার আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান উপহার এবং কেমোথেরাপীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস
চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পেঁপে একটি আদর্শ ফল যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেঁপে রাখা উচিত পেপে ডায়াবেটিস হাওয়া হাওয়া প্রতিরোধ করে। পেঁপে ফলটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ পেঁপে ফলটি অধিক পরিমাণে মিষ্টি নাই। যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদেরকে নিয়মিত পেঁপে খেতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url